ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের
বুধবার বিকালে সরেজমিন গিয়ে ছেলের পরিবারের সাথে কথা বলে জানা গেছে, পলাশী ইউনিয়নের মদনপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে নুর কুতুব সুজনের (২২) সাথে হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের ভ্যান চালক আশরাফুল ইসলামের কলেজ পড়ুয়া আরফিনা আক্তারের সাথে পারিবারিক দেখাশুনার পর রবিবার (৯ জুলাই) আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে দেয়া হয়। ওই দিন রাতেই নববধু নিয়ে সুজন তার বাড়িতে চলে আসেন। এর দুই দিন পর মঙ্গলবার (১১ জুলাই) দুপুরে স্বামী-স্ত্রী মাঝে মনমালিন্যের এক পর্যায়ে নববধু আরফিনা দা দিয়ে স্বামী সুজনের পুরুষাঙ্গে আঘাত করে। পরে সুজনের চিৎকারে ঘরের দরজা ভেঙ্গে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে লালমনিরহাট সদর ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সুজনের চাচা দুলাল মিয়া জানান, পুরুষাঙ্গের রগ কেটে যাওয়ায় ২৪টি সেলাই করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, চিকিৎসক জানিয়েছেন প্রতিদিন ২৪ থেকে ২৫শ টাকার ঔষধের প্রয়োজন হবে। আর ভাল চিকিৎসা পেলে সুজন আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে উঠবে।
নববধু আরফিনা আক্তার জানান, এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন থেকে একই উপজেলার কেটকিবাড়ি গ্রামের সহপাঠী রুবেলের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বর্তমানে মেয়েটি দইখাওয়া আদর্শ ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী আর প্রেমিক রুবেলও একই কলেজের সহপাঠী।
আরফিনা আক্তার আরও জানান, হঠাৎ করে তার বাবা আশরাফুল এক দিনেই বিয়ের আয়োজন করে। কিন্তু প্রেমের বিষয়টি তিনি তার পরিবারকে জানাতে পারেনি। বিয়ের দিন বিষয়টি প্রেমিক রুবেলকে মোবাইল ফোনে আরফিনা জানায় বলে দাবি করেন। এরপর রুবেলের পক্ষ থেকে কোন সাড়া না পেয়ে নববধু সেজে স্বামীর বাড়িতে চলে আসে। মঙ্গলবার দুপুরে তার স্বামী জোরপূর্বক দৈহিক সম্পর্ক করতে চাইলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরফিনা দা দিয়ে তার পুরুষাঙ্গে আঘাত করেন বলে জানান। এরপর আর কিছুই বলতে পারেন না আরফিনা।
এদিকে আরফিনাকে পরদিন সোমবার (১০ জুলাই) মেয়ের বাবা নিতে এসে দেখতে পান তার মেয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। আর আরফিনাকে দেখতে স্বামী সুজনের বাড়িতে ভীড় করছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ। তাকে পাশের বাড়ির উঠানে বসে রাখা হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে আপোষ-মীমাংসার জন্য ছুটে এসেছেন পলাশী ইউপি চেয়ারম্যান শওকত আলী ও ইউপি সদস্য মহুবর রহমান।
সুজনের জেঠা বদিয়ার রহমান জানান, প্রচুর রক্তক্ষরন হয়েছে। আর ছেলে পুরুষাঙ্গের মাঝামাঝি জায়গায় রগ কেটে যাওয়ায় সেড়ে উঠতে অনেক সময় লাগবে।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেশ্বর রায় বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
No comments: