বিশিষ্ট কবি ও প্রাবন্ধিক ফরহাদ মজহার উদ্ধারের পর তিনি দাবি করেছেন, চোখের ড্রপ কিনতে বাসা থেকে বের হলে রাস্তায় তিনজন লোক তাঁকে ধাক্কা দিয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। তাঁর চোখও বেঁধে ফেলে। মুক্তিপণের জন্য অপহরণ করা হয়েছে ভেবে তিনি নিজে থেকেই টাকা দিতে চান। তারা দুই কোটি টাকা দাবি করে। এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই জানালে তারা এক কোটি টাকা চায়। তিনি সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ লাখ টাকা দিতে পারবেন বলে জানান। তখন তারা বাসায় ফোন করে টাকা রেডি রাখতে বলে। কিন্তু সন্ধ্যায় টাকা না নিয়েই তারা তাঁকে খুলনায় ছেড়ে দেয়। বাসের একটি টিকিটও দেয়। সেখান থেকে বাসে করে ফেরার সময় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে উদ্ধার করে।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহসান হাবীবের কাছে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ফরহাদ মজহার এসব কথা বলেছেন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। সূত্রের ভাষ্য মতে, ফরহাদ মজহার বলেছেন—তিনি মনে করছেন যারা তাঁকে অপহরণ করেছিল তা মুক্তিপণের জন্য নয়, তাদের উদ্দেশ্য ছিল সরকারকে বিব্রত করা।
গতকাল বিকেল ৩টা থেকে ৫টা ২০ মিনিট পর্যন্ত ফরহাদ মজহার ম্যাজিস্ট্রেটের খাস কামরায় ছিলেন। এ সময় তিনি জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি নেওয়ার পর ফরহাদ মজহারকে জিম্মায় নেওয়ার জন্য তাঁর স্ত্রী ফরিদা আখতার আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে আবেদন জানান। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শুনানি শুরু হয়। এজলাসে ম্যাজিস্ট্রেট ফরহাদ মজহারকে জিজ্ঞেস করেন তিনি নিজ জিম্মায় যেতে ইচ্ছুক কি না। জবাবে তিনি হ্যাঁ-সূচক মাথা নাড়েন। এরপর ম্যাজিস্ট্রেট ১০ হাজার টাকা বন্ডে তাঁকে নিজ জিম্মায় যাওয়ার অনুমতি দেন। কিছুক্ষণ পরই আদালত থেকে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে আদাবর থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তার যে গাড়িতে করে তিনি এসেছিলেন সেই গাড়িতে করেই আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বেরিয়ে যান। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৭টায় তাঁকে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয়। ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, চিকিৎসকরা ফরহাদ মজহারকে ভর্তি করার পরামর্শ দিলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া থেকে উদ্ধারের পর ফরহাদ মজহারকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় অভয়নগর থানায়। সেখান থেকে পাশের ফুলতলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত পৌনে ২টার দিকে তাঁকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয় পুলিশ। গতকাল সকাল পৌনে ৮টার দিকে তাঁকে আদাবর থানায় নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে সকাল ১১টার দিকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় আদালতে।
পুলিশের দাবি, নওয়াপাড়া থেকে উদ্ধারের সময় ফরহাদ মজহারের কাছে সাদা রঙের একটি ব্যাগ ছিল। তার ভেতর থেকে একটি কালো পাঞ্জাবি, মোবাইলের চার্জার, টুথব্রাশ, চিরুনি ও সাড়ে ১২ হাজার টাকা পাওয়া গেছে।
ঢাকায় পৌঁছার খবর পেয়ে ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ও স্বজনরা গতকাল সকালে আদাবর থানায় তাঁকে দেখতে যান। তবে ফরহাদ মজহার বিপর্যস্ত থাকায় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারেননি তাঁরা।
ফরহাদ মজহারের খোঁজ না পেয়ে সোমবার তাঁর পরিবার আদাবর থানায় একটি জিডি করেছিল। পরে সেটি অপহরণ মামলা হিসেবে গ্রহণ করে পুলিশ। গতকাল বিকেলে মামলাটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ফরহাদ মজহার অপহূত হয়েছিলেন নাকি নিজেই চলে গিয়েছিলেন, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। গতকাল ডিবি কার্যালয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন ও তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার মজুমদার। পরে পুলিশ কর্মকর্তারা দুপুর ১টার দিকে ফরহাদ মজহারের বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন জানান, ফরহাদ মজহারের স্ত্রী সোমবার রাতে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা করেছেন। তবে ফরিদা আখতার কালের কণ্ঠকে জানান, তিনি কোনো মামলা করেননি। ফরহাদ মজহারকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে থানাকে অবগত করেছেন।
ফরহাদ মজহার যা বললেন : সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের ভাষ্য অনুযায়ী, ফরহাদ মজহার পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একই বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, রবিবার রাত সাড়ে ৩টার সময় ঘুম থেকে উঠে তিনি চোখে সমস্যা বোধ করতে থাকেন। ওষুধ কেনার জন্য ভোর ৫টার সময় তিনি বাসা থেকে বের হন। বাসার পাশেই একটি হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে ড্রপ কেনার সিদ্ধান্ত নেন। হাতে সময় থাকায় তিনি কিছুক্ষণ হেঁটে পরে ড্রপ কেনার কথা ভাবেন। রাস্তায় হাঁটার সময় তিনজন মানুষ তাঁকে ধাক্কা দিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তুলে ফেলে। মাইক্রোবাসটি গাবতলীর দিকে যেতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর তিনি তাঁর মোবাইল ফোন থেকে তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানান, তাঁকে নিয়ে যাচ্ছে। ফোন করার পরপরই ওই লোকজন তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়ে যায় এবং চোখ বেঁধে ফেলে। তিনি ভেবেছিলেন টাকার জন্য তাঁকে অপহরণ করা হচ্ছে। একপর্যায়ে তিনি তাদের বলেন, ‘টাকা দিতে পারব, আমাকে ছাড়ো। ’ তারা বলে, দুই কোটি টাকা দিলে ছেড়ে দেওয়া হবে। এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই বলে জানান তিনি। তারা এক কোটি টাকায় নামে। তিনি সর্বোচ্চ ৩০-৩৫ লাখ টাকা দিতে পারবেন বলে জানান। তারা বলে, মিসেসকে বলেন টাকা রেডি করার জন্য। এরপর তিনি সকাল ৬টা ২১ মিনিটে স্ত্রীকে ফোন করে টাকার কথা বলেন। সন্ধ্যা ৭টার কিছু পর তাঁকে খুলনায় নামিয়ে দেয় তারা। বাসের টিকিট ধরিয়ে দিয়ে বলে, ‘বাসে উঠে চলে যান। আমাদের লোক আপনাকে ফলো করবে। ’ পরে বাস কাউন্টারে যাওয়ার জন্য তিনি একটি রিকশা নেন। রিকশাচালককে জিজ্ঞাসা করেন এটি কোন জায়গা। রিকশাচালক জানান, সেটি খুলনা শহরের কেডিএ রোড। পরে তিনি একটি হোটেলে খেতে যান। হোটেল মালিক তাঁর দিকে কয়েকবার তাকান। খেয়েদেয়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে তিনি বাস কাউন্টারে যান। সেখানে গিয়ে মোবাইল ফোনে চার্জ দেন। হানিফ পরিবহনের বাসটি এলে তিনি তাতে উঠে সবার পেছনের সিটে বসেন। গাড়ি চলতে থাকার সময় তিনি ঘুমিয়ে যান। এরপর অভয়নগরে নওয়াপাড়া এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে নেয়।
তিনি মনে করছেন, মুক্তিপণের জন্য নয়, সরকারকে বিব্রত করাই ছিল অপহরণকারীদের উদ্দেশ্য।
স্ত্রী, সন্তান যা বলল : গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে ডিবি কার্যালয়ের সামনে কথা হয় ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতারের সঙ্গে। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, “রবিবার রাত ১১টার দিকে ফরহাদ মজহার ঘুমিয়ে পড়েন। প্রতিদিন ভোর ৪টার আগে ঘুম থেকে উঠে কম্পিউটারে লেখালেখি করেন তিনি। তবে সে রাতে তাঁকে কম্পিউটারে না দেখে আমি চিন্তিত হই। ৫টা ২৯ মিনিটের দিকে উনি ফোন দিয়ে বলেন, ‘আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। মেরে ফেলবে। ’ এক ঘণ্টা পর আবার ফোন দিয়ে ৩৫ লাখ টাকার কথা বলেন। বোঝা যাচ্ছিল, উনাকে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছিল না। ”
এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদা আখতার বলেন, ‘সাধারণত ফরহাদ মজহার ফোন বাইরে নেন না। বের হলেই মোবাইল নিতে হবে এমন ব্যাপার নেই ওনার। ’ আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মামলার চিন্তা করিনি। অপহরণের ঘটনা ঘটলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সাহায্য নিতে হলে অভিযোগ করতে হয়। তা না হলে বাহিনীর সদস্যরা কাজ করতে পারেন না। এ কারণে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। আমাদের চাহিদা ছিল উনাকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাওয়া। ঢাকায় আনার পর আদাবর থানায় কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, আমি বিধ্বস্ত, ট্রমাটাইজ। ’
গতকাল দুপুরে ডিএমপি গণমাধ্যম কার্যালয়ে পুলিশের সংবাদ সম্মেলনের সময় ফরহাদ মজহারের মেয়ে সমতলী হকও উপস্থিত ছিলেন। সমতলী কালের কণ্ঠকে বলেন, তিনি আমেরিকায় থাকেন। কিছুদিন আগে দেশে এসেছেন। ঘটনার দিন তিনি সিলেটে ছিলেন। বাবার নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে তিনি ঢাকায় এসেছেন।
ব্রিফিং : গতকাল দুপুর ১টার দিকে ডিএমপির গণমাধ্যম শাখায় ব্রিফিংয়ে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন, তেজগাঁও জোনের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার, গণমাধ্যম শাখার ডিসি মাসুদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। আবদুল বাতেন বলেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য আসে যে ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করা হয়েছে। পরে তাঁকে উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। সকালবেলা ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। তাঁকে যখন পাওয়া যাচ্ছিল না তখন তাঁর মোবাইল ফোন থেকে ৩৫ লাখ টাকা দাবির কথা জানানো হয়। ফরহাদ মজহারের স্ত্রী গতরাত (সোমবার) সাড়ে ১১টার দিকে অপহরণ মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-৪। তাঁকে উদ্ধারের পর কেমন করে ঘটনা ঘটল, কারা নিয়ে গেল এসব বিষয়ে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে বিস্তারিত জানাব। ’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফরহাদ মজহার জানিয়েছেন, সকালবেলা কয়েকজন এসে তাঁকে মাইক্রো দিয়ে নিয়ে গেছে। তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে উনার ফোন থেকেই কথা হয়েছে। এ বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখছি। ’
ফরহাদ মজহারকে ফরিদপুরের একটি স্থানে আড়াই ঘণ্টা রাখা হয়েছিল কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুল বাতেন বলেন, ‘এ বিষয়টি আমরা এখনো জানি না। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ’
ব্যাগ এলো কোথা থেকে : পুলিশ জানিয়েছে, ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারের সময় তাঁর কাছ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। তাতে একটি পাঞ্জাবি, মোবাইল ফোনের চার্জার ও সাড়ে ১২ হাজার টাকা ছিল। একজন অপহরণের শিকার হলে তাঁর কাছে বাইরে যাওয়ার ব্যাগ থাকবে কেন?—এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফরহাদ মজহারের স্ত্রী ফরিদা আখতার বলেন, তিনি তো কালো পাঞ্জাবি পরেন না। তা হলে কালো পাঞ্জাবি নিয়ে যাবে কেন? বাসার সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ফুটেজেও তাঁর সঙ্গে ব্যাগ দেখা যায়নি। তা হলে সেই ব্যাগ এলো কোথা থেকে?
মামলায় যা বলা হয়েছে : সোমবার রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে আদাবর থানায় একটি অপহরণ মামলা হয়েছে। বাদী ফরিদা আখতার। হাতে লেখা দুই পৃষ্ঠার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, “আমি ফরিদা আখতার দেশের বিশিষ্ট লেখক ও কবি ফরহাদ মো. মাজহারুল হক ওরফে ফরহাদ মজহারের স্ত্রী। আপনার থানার অধীন ফ্ল্যাট-৪ এ-বি, হক গার্ডেন, ১ নং রিংরোড, শ্যামলী আদাবরে বসবাস করি। আমার স্বামী সাধারণত খুব ভোরে ঘুম থেকে জাগেন এবং লেখালেখি করেন। সকাল ৫টার দিকে আমার ঘুম ভাঙার পর আমি উনাকে লেখার টেবিলে না দেখতে পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ি এবং সারা ঘরে খুঁজতে থাকি। ইতিমধ্যে সকাল ৫টা ২৯ মিনিটে আমার স্বামীর ফোন থেকে আমাকে কল দেন। তিনি ভয়ার্ত কণ্ঠে জানান, ‘ওরা আমাকে নিয়ে যাচ্ছে, মেরে ফেলবে। ’ এরপর ফোন কেটে যায়। কে বা কারা তাঁকে এভাবে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে আমি কিছুই বুঝতে পারিনি। বিষয়টি মৌখিকভাবে আদাবর থানায় জানানোর পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধারে তত্পর হয়। এরপর ফরহাদ মজহারের মোবাইল ফোন থেকে সারা দিন আরো চারবার ফোনকল আসে। ফোনালাপে ফরহাদ মজহার জানান, অপহরণকারীরা ৩৫ লাখ টাকা চাচ্ছেন। এ টাকা পেলে তাঁরা তাঁকে ছেড়ে দেবেন। অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি যে এখন পর্যন্ত ফোন ট্র্যাক করে ফরহাদ মজহারকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ভবনে রক্ষিত সিসি ক্যামেরা পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই ভবনের বাইরে যাওয়ার পর অপহৃত হয়। এ বিষয়ে আমরা ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন। অতএব, উপরোক্ত বিষয়ে এজাহার গ্রহণপূর্বক ফরহাদ মজহারকে উদ্ধারে সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। ”
খুলনার হোটেলে যা হয়েছে : সোমবার রাতে খুলনার নিউ মার্কেটসংলগ্ন গ্রিল হাউস নামের এক হোটেলে খেতে গিয়েছিলেন ফরহাদ মজহার। হোটেলের মালিক, ক্যাশিয়ার ও খাবার সরবরাহকারী তিন ব্যক্তি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এ তথ্য জানান। এর আগে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাঁর অবস্থান নিউ মার্কেট এলাকায় নিশ্চিত হয়ে সেখানে অভিযানে নামে খুলনা র্যাব-৬। তারপর র্যাব খবর পায় গ্রিল হাউস হোটেলে ফরহাদ মজহার অবস্থান করছেন। এই খবরে রাত ১০টায় সেখানে যায় র্যাব, কিন্তু ততক্ষণে তিনি সে স্থান ত্যাগ করেন। গ্রিল হাউসের মালিক আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ফরহাদ মজহার তাঁর হোটেলে আসেন। সাদা ভাত, ডাল ও সবজি দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করেন। তারপর ৯টার দিকে তিনি বের হয়ে যান। তিনি একা ছিলেন। তাঁর পরনে সাদা লুঙ্গি, সাদা পাঞ্জাবি এবং মাথায় সাদা কাপড় ছিল। ফরহাদ মজহারকে খাবার সরবরাহকারী হোটেল স্টাফ রেজাউল করিম জানান, তাঁকে (ফরহাদ মজহার) শারীরিকভাবে বেশ ক্লান্ত দেখাচ্ছিল। তাঁর চোখে ঘুম ঘুম ভাব ছিল। ভাত খেয়ে তিনি বের হয়ে যান।
হোটেলের ক্যাশিয়ার ইব্রাহিম জানিয়েছেন, তাঁর (ফরহাদ মজহার) ১৭০ টাকা বিল হয়েছিল। তিনি নিজে বিল পরিশোধ করে হোটেল থেকে বের হয়ে যান।
No comments: