তুমি অধম, তাই বলে আমি উত্তম হব না কেন? আবারও দৃষ্টান্ত রাখলেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কাতারের কোম্পানি ‘ডলফিন’ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে যে গ্যাস সরবরাহ করছে, সেই গ্যাস ব্যবহার করে আবুধাবিতে উৎপাদিত হচ্ছে বিদ্যুৎ। এই বিদ্যুতের আলোয় গত রাতেও ঝলমল করেছে আবুধাবি, আজও জ্বুলে উঠবে শহরটি। কাতার থেকে প্রাপ্ত গ্যাসের বদৌলতে উৎপাদিত বিদ্যুতে এই প্রচন্ড গরমে এসির শীতাতপ পরিবেশে আরাম- আয়েশে বাস করছেন আবুধাবির লাখো নাগরিক।
মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে উদার এবং শান্তিপূর্ণ দেশ কাতারের আরেকটি মানবিক আচরণের উদাহরণ হল আরব আমিরাত সৌদি-বাহরাইন-মিশরকে নিয়ে কাতারকে বয়কটের ডাক দিয়েছে- আরব আমিরাতে কাতারের পক্ষে কোনো সহানুভূতি দেখালে ১৫ বছরের জেল সাজা দেওয়ার বিধান ঘোষনা সহ চালু করা হয়েছে। আমিরাতের এমিরেটস, ইত্তিহাদ, এয়ার আরাবিয়া, ফ্লাই দুবাই কাতারের সঙ্গে আকাশ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে, কাতার ঠিক এই মুহূর্ত পর্যন্ত সেই আরব আমিরাতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে।
ব্লুমবার্গ ম্যাগাজিন গতকাল জানিয়েছে, আবুধাবির অর্ধেক বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয় কাতার থেকে পাঠানো গ্যাসের শক্তিতে। কাতার যদি আরব আমিরাতের আচরণের পরিবর্তে প্রতিশোধ নয়, বরং সমান আচরণের নীতিও গ্রহণ করতো, তবে অন্ধকার হয়ে যেত আরব আমিরাতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আবুধাবি। কিন্তু কাতার তা করেনি। এটি করার কোনো পরিকল্পনাও নেই বলে গতকাল জানিয়েছেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সৌদিআরব, বাহরাইন, আরব আমিরাত থেকে কাতারের নাগরিকদের বের হতে ১৪দিনের সময় বেঁধে দিয়েছে এসব দেশ।
কিন্তু তিনদিন পার হওয়ার আগেই একরকম ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া হচ্ছে কাতারিদের। কাতার একবারও এ দেশে বসবাসরত সৌদি, বাহরাইনি ও আমিরাতি নাগরিকদের বলেনি, তোমরা বের হয়ে যাও। এমনকি কাতারের পথেঘাটে একজন কামলা মিশরীয়ও বলতে পারবে না, কাতারের কোনো মুদি দোকানে কেউ তার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েছে। এটাই হচ্ছে কাতার। কাতারবাসীর ভদ্রতা এবং মানবিকতা। এই চারিত্রিক ও নৈতিক লড়াইয়ে ছোট আয়তনের দেশ কাতার হারিয়ে দিয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চলের অন্য সবগুলো দেশকে, যাদের আয়তন কাতারের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বড় সড়।
Tag:
No comments: