খুলনার এরশাদ শিকদারের কথা আপনাদের মনে আছে নিশ্চয়ই।তিনি ছিলেন একজন কুখ্যাত অপরাধী ও সিরিয়াল কিলার। খুন, অত্যাচার, চুরি-ডাকাতি ও অন্যান্য নানা অপরাধের জন্য তিনি কুখ্যাত ছিলেন।
কমপক্ষে ৬০ জন মানুষকে হত্যা করেছেন তিনি। হত্যার দায়ে তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়, যা ২০০৪ সালের মে মাসের ১০ তারিখে কার্যকর করা হয়। প্রথম জীবনে এই এরশাদ শিকদার কুলি হিসাবে কাজ করলেও নিজ বাহিনী নিয়ে রামদা দিয়ে কুপিয়ে মানুষ হত্যা করতেন। আবার মানুষের মাংস নিজের সুইমিংপুলে মাগুর মাছকে খাওয়াতেন বলেও কথিত রয়েছে।
মানুষ হত্যায় এরশাদ শিকদারের লোমহর্ষকতাকেও পিছনে ফেলেছেন বগুড়ার সন্ত্রাসী মতিন সরকার। ক্ষমতাসীন দলের একটি সহযেগী সংগঠনের জেলা পর্যায়ের নেতা হয়ে রাতারাতি বনে যান অগাদ সম্পদের। কাঁচা টাকার মোহে হিংস্র অমানুষ হয়ে উঠেন মতিন সরকার।
পূর্বপশ্চিমবিডিনিউজের অনুসন্ধানে জানা গেছে, ক্ষমতার লোভে মানুষ খুন করতে পিছপা হননি মতিন সরকার। নিজ পরিবারের মধ্যেই ৪২ জন কসাই রয়েছে তার। যাদেরকে মতিন ইশারা দিলেই মানুষ খুন করে আসতো।
তারা খুন করার সময় কে কত প্রভাবশালী লোক তা ভেবেও দেখতো না। এ কথা বগুড়ার মানুষের কাছে দম্ভ করে মতিন নিজেই বলে বেড়াতেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মতিন সরকার শুধু লোক দিয়ে খুন করিয়েই ক্ষান্ত হন না। খুব বেশি কারো ওপর রেগে গেলে প্রকাশ্য দিবালোকে ফিল্মি স্টাইলে কুপিয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যা করতেন তিনি।
কয়েক বছর আগে, বগুড়া শহরের মাটিঢালী মোড়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা শফিক চৌধুরী ওরফে পাগলা শফিককে প্রকাশ্য দিবালোকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে মতিন সরকার।
এ হত্যাকান্ডে দায়ের করা মামলার ১ নম্বর ছিল মতিন। কিন্তু তাকে প্রশাসন শেল্টার দিয়ে রক্ষা করেছে।
বগুড়া শহর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা ঠান্ডুকেও নিজ এলাকা কসাইপাড়াতে দিনেদুপুরে হত্যা করে মতিন।
মতিনের হাতে সবচেয়ে নৃশংস হত্যার শিকার হন শহর যুবদলের কর্মী ইমরান হোসেন। সুঠাম দেহের অধিকারী ও শক্তিশালী ইমরানের বাড়িতে গিয়ে হত্যা করার সময় জোরজবদস্তির এক পর্যায়ে কিছুটা আঘাত পায় মতিন সরকার।
তারপর ইমরানকে লোকজন নিয়ে এমনভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়, যারা তার লাশ দেখেছেন তারা শিউরে উছেছেন। কমপক্ষে ১৬ ফালা করা হয় ইমরানের লাশকে।
উল্লেখ্য, বগুড়াতে সম্প্রতি মেয়েকে ধর্ষণের পর মা-সহ মেয়েটিকে ন্যাড়া করে দেয়ার অপরাধে গ্রেপ্তার হয়েছেন মতিন সরকারের ছোটভাই তুফান সরকার।
এরপর থেকেই থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসতে শুরু করে বড় ভাই মতিন সরকারের। সরকারী দল করা এবং টাকা দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে পুলিশের খাতায় পলাতক হলেও দিব্যি ঘুরে বেড়িয়েছেন বগুড়াতে।
কায়েম করেছিলেন ত্রাসের রাজত্ব। ঘটনার পর কয়েকদিন নিজ বাড়িতে থাকলেও মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।
No comments: