sponsor

sponsor
এস,এস কানেকশনস্. Theme images by kelvinjay. Powered by Blogger.

Slider

Updates

updates

National News

News

More News

Life & style

Games

Sports

World News

» » বাংলাদেশ সংলগ্ন সীমান্তে ভূমিমাইন্ড পুঁতে রাখছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।


বাংলাদেশ সংলগ্ন সীমান্তে ভূমিমাইন্ড পুঁতে রাখছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতেই তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। সেই সাথে মাইনের ওপর জুসের প্যাকেট, কম দামি মোবাইল ফোনের সেটের মতো জিনিসও তারা রেখে দিচ্ছে। অল্প বয়সীদের মাইনের শিকার বানাতেই এই ঘৃণ্য ফাঁদ পাতা হচ্ছে। এরই মধ্যে মাইন বিস্ফোরণে এক সপ্তাহে মারা গেছে ছয় রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ-মিয়ানমারের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তের কোনারপাড়াসংলগ্ন তুমব্রু খাল। খালের উত্তর-পশ্চিমাংশে বিজিবি ক্যাম্প। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পের কাছেই টহল দিচ্ছেন বিজিবি সদস্যরা। কাছেই নো ম্যানস ল্যান্ডে (জিরো পয়েন্ট) কয়েক হাজার রোহিঙ্গা শিশুসহ নর-নারী অবস্থান করছে। অনেক রোহিঙ্গা ওই ক্যাম্পসংলগ্ন খালের পাড়ে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে। এক বিজিবি সদস্যের ওয়্যারলেস সেটে শোনা যায়, তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, ‘সবাই সতর্ক থাকুন, অ্যালার্ট হয়ে যান। মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের বর্ডারে এসে পদাচরণ করছে, তারা মাইন স্থাপন করছে।’
সতর্কবার্তায় বলা হচ্ছিল, মিয়ানমার সীমান্তে সরাসরি মিয়ানমার সেনাবাহিনী নেমে এসেছে এবং বিজিপির প্রহরায় কাঁটাতারসংলগ্ন এলাকায় মাইন পুঁতছে। এ কারণেই নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় ছিল।

বিজিবির এক সদস্য প্রতিবেদককে আঙুল উঁচিয়ে দেখিয়ে বলেন, ‘সাংবাদিক ভাই, দেখেন, মিয়ানমারের সীমান্তে সরাসরি সেনাবাহিনী নেমে এসেছে। তারা বাংলাদেশ বরাবর মাইন পুঁতে রাখছে। ’ এ সময় মিয়ানমারের দিকে ক্যামেরা না ধরতেও অনুরোধ করেন বিজিবি সদস্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক সদস্য বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন মতে বিনা নোটিশে সীমান্তের তিন কিলোমিটারের ভেতরে কোনোভাবেই কোনো দেশের সেনাবাহিনী সেনা পোশাকে সেনা অস্ত্র নিয়ে আসতে পারে না। কিন্তু মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেসবের ধারেকাছেও নেই। তারা প্রতিক্ষণ, প্রতিদিন, প্রতিসময় যখন যা ইচ্ছা, তাই করছে। ’

বিজিবির আরেক সদস্য বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবারও একই সময়ে একই স্থানে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা পোশাক পরে এসে মাইন পুঁতেছে। এমনকি কয়েক দিন ধরে বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর ২৭১ কিলোমিটার অংশে ব্যাপকভাবে মাইন পুঁতে রেখেছে। বিশেষ করে যেসব পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসা-যাওয়া করে থাকে সেসব পয়েন্টকে প্রাধান্য দিয়ে মাইন পোঁতা হচ্ছে। ’

সীমান্ত এলাকার মানুষ জানিয়েছে, মিয়ানমার সেনাবাহিনী বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর মাইন পুঁতে মাইনের পাশে জুসের প্যাকেটসহ এটা সেটা ফেলে রাখে। এ ছাড়া সস্তা দামের মোবাইল ফোনও পড়ে থাকতে দেখা গেছে সেখানে। গত এক সপ্তাহে মাইন বিস্ফোরণে ১৩ বছরের এক কিশোরীসহ অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছে।

তুমব্রু সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশি বাসিন্দা কৃষক আবুল হাসেম (৭০) বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তুমব্রু সীমান্তে আমার জমিতে ফসল ফলিয়ে আসছি। কিন্তু কয়েক দিন ধরে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বিজিপির প্রহরায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তাদের সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে মাইন পোঁতার কাজ করছে। আজ সকালেও (শুক্রবার) এই দৃশ্য দেখে আমি প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে আসি। ’

একই এলাকার আরেক কৃষক আবদুস শুক্কুর বলেন, ‘মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের সীমান্তে কাঁটাতারের সঙ্গে এসব মাইন পুঁতছে। গত কোরবানির ঈদের পর থেকে বিভিন্ন স্থানে পোঁতা মাইন বিস্ফোরিত হয়ে অন্তত ছয়জন রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছে। ’

এদিকে উখিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে কয়েক দিন ধরে অবস্থানকারী আহত দুজন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে গতকাল সকালে। মিয়ানমারের ভুচিদংয়ের তমবাজার এলাকার আলী আকবর (৭০) মিয়ানমার বাহিনীর রকেট লাঞ্চারে এবং একই এলাকার আছদ আলী (৮০) গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। আছদ আলী স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন বলে স্বজনরা জানিয়েছে।

আলী আকবরের বড় ছেলে ছৈয়দ জামাল বলেন, ‘২৯ আগস্ট একটি রকেট লাঞ্চার এসে পড়ে আমাদের বাড়িতে। এতে আগুন ধরে যায় এবং বাবার সর্বশরীর লাঞ্চারের স্প্লিন্টারের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। এ সময় বাবাকে বাড়িতে ফেলে তিন বোন পাহাড়ি এলাকায় পালিয়ে প্রাণে বাঁচে। এরই মধ্যে বাবা গড়াগড়ি খেতে খেতে পাহাড়ি টিলা থেকে নিচের ছড়ায় পড়ে যান। সেখান থেকে পড়শিরা তাঁকে উদ্ধার করে সোজা মিয়ানমার সীমান্ত পেরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নিয়ে আসে। ক্যাম্পে এনজিও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তাঁর মৃত্যু হয়। ’

এ ছাড়া টেকনাফে আরো একটি লাশের সন্ধান পেয়েছে এলাকাবাসী গতকাল সকালে। নাফ নদ হয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টাকালে নৌকাডুবির পর এ পর্যন্ত ৮০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে প্রশাসন।

এ ছাড়া টেকনাফে রোহিঙ্গা পাচারে সহায়তা ও জিম্মি করে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ৫২ দালালকে আটক করেছে র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড। পরে আটক দালালদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে। সূত্রঃ অনলাইন।

«
Next
Newer Post
»
Previous
Older Post

No comments:

Leave a Reply