শুরু হয়ে গেছে প্রাণী জগতের ধ্বংসলীলা !!
বিরল প্রজাতির জিরাফ থেকে শুরু করে হাজার হাজার প্রাণি পৃথিবীর বুক থেকে প্রাকৃতিক নিয়মেই মুছে গিয়েছে। এবার নতুন করে শুরু হয়েছে প্রকৃতির সেই গণ-ধ্বংসলীলা, এক নতুন রিপোর্টে এই বিষয়ে সতর্ক করলেন বিজ্ঞানীরা।
ন্যাশনাল অ্যাকডেমি অফ সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত এক নতুন গবেষণাপত্রে জানানো হয়েছে, প্রাণিজগতের ষষ্ঠ ধ্বংসলীলা শুরু হয়ে গিয়েছে। এর আগে যতবারই এরকম গণ-ধ্বংসলীলা শুরু হয়েছে, তার কারণগুলি ছিল প্রাকৃতিক। কিন্তু এবারের ধ্বংসলীলার কারণ মানুষ ও মানুষের বেহিসেবি জীবনযাত্রা।
মেক্সিকো সিটির গবেষক জেরার্ড সেবালস বলেছেন, এখনই এই বিষয়ে সতর্ক না হলে বিপদ বাড়বে। সেবালসের সঙ্গে যাঁরা এই গবেষণায় যুক্ত, সেই পল এনরিক ও রুডল্ফ ডিজরো দু’জনেই স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তাঁরা রীতিমতো বৈজ্ঞানিক তথ্য একত্রিত করে দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে পৃথিবীর বুক থেকে একে একে পরিচিত প্রাণিদের অস্তিত্ব মুছে যাচ্ছে।
এর জন্য দায়ি মূলত অতিরিক্ত দূষণ, জলবায়ুর বৈপ্লবিক পরিবর্তন এবং খাদ্য ও বাসস্থানের অভাব। স্তন্যপায়ী, পাখি, সরীসৃপ ও উভচর- প্রত্যেকেই পড়েছে প্রবল অস্তিত্ব সংকটের মুখে। বাসস্থানের ক্ষতির জন্য অন্তত ৭০ শতাংশ স্তন্যপায়ীর সংখ্যাই আর বাড়ছে না। দ্রুতহারে জঙ্গল কেটে মানুষের জন্য বহুতল, রাস্তা, পরিকাঠামো নির্মাণই প্রাণিজগৎকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে বলে গবেষকগণ অনুমান করছেন।
উদাহরণ হিসাবে চিতাবাঘের কথা তুলে ধরেছেন তাঁরা। গভীর, ঘন জঙ্গল কমতে থাকায় চিতাবাঘের প্রজননের জন্য মিলছে না উপযুক্ত এলাকা। পৃথিবীতে আর মাত্র ৭০০০টি চিতা অবশিষ্ট রয়েছে। আফ্রিকান সিংহের সংখ্যা ১৯৯৩ সালের তুলনায় কমেছে ৪৩ শতাংশ। প্যাঙ্গোলিন এখন বিলুপ্তপ্রায়, জিরাফের সংখ্যাও কমছে ক্রমশ।
১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে পশুপ্রাণিদের উপর এই গবেষণা শুরু হয়। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০০ বছরে ২০০-রও বেশি প্রাণিকূল হারিয়ে গিয়েছে পৃথিবী থেকে। সাধারণত, এক একটি প্রাকৃতিক ধ্বংসলীলার মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু সময় থাকে। কিন্তু গত একশো বছরে ধ্বংসলীলার হার যেন একধাক্কায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এই ধংসলীলা অবিলম্বে থামানো না গেলে পৃথিবীর বুকে বহু বিচিত্র প্রাণিকেই আর দেখতে পাওয়া যাবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। সূত্র অনলাইন।
No comments: